রোনালদো এর চোখে ফিরে দেখা ১৯৯৮ ও ২০০২ ফিফা বিশ্বকাপ

ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের একটি মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যে পুরস্কার দেওয়া হয় তাও হল গোল্ডেন বুট। ।বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড ছিল জার্মানীর মিরোস্লাভ ক্লোস এর। তিনি ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট বিজয়ী হন। ১৯৮৬ সালের গোল্ডেন বুট বিজয়ী ইংল্যাণ্ডের গেরি লিনেকার, স্প্যানিশ আইবিজা দ্বীপে ২০০২ সালের গোল্ডেন বুট জয়ী ব্রাজিলিয়ান রোনালদো দা লিমা এর সাক্ষাৎকার নেন। তাঁদের সেই কথোপকথন শুনুন আর ম্যাচের হাইলাইটস গুলোও দেখুন।

রোনালদোঃ ফুটবল হল মানুষের জীবনে সবচেয়ে ক্ষমতাশালী বস্তু। বিশকাপের মঞ্চে গোল করা আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল।

গেরিঃ তোমাকে দেখে ভালো লাগছে, ধন্যবাদ আসার জন্য।

রোনালদোঃ এখানে এসে ভালো লাগছে। আমি আইবিজা দ্বীপ ভালোবাসি।

গেরিঃ আমি ও ভালোবাসি তবে তোমার মত না

রোনালদোঃ মোটামুটি মহামারি এর এই ২ টা বছর এখানেই ছিলাম।

গেরিঃ (হেসে বললেন) আটকে থাকার জন্য খারাপ জায়গা। আমি এখানে এসেছি আমাদের দুইজনেরই প্রিয় একটা বিষয়ে আলোচনা করতে আর তা হল, গোল- বিশ্বকাপ এবং গোল্ডেন বুট।

রোনালদোঃ এটা সত্যি যে আমরা গোল এবং ফুটবল অনেক ভালোবাসি। গোল করা আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি আর বলতে গেলে ব্যাপারটা এমন যে পিচে গোল করার মাধ্যমে আমি কিভাবে আমার দলের সাথীদের সাহায্য করতে পারি। তাঁরা যদি আমাকে পাস দেয় আমি গোল করবই এবং এতে আমার দলকে সাহায্য করা ও হয়ে যাবে।

রোনালদো লুইস নাজারিও দা লিমা জাপান ও সাউথ কোরিয়ায় ২০০২ বিশ্বকাপে বিশ্ব ফুটবলের সেই সময়ের সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে এসেছিলেন। ২৭ বছর বয়সে তাঁর হয়ত ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্যের চূড়ায় থাকার কথা কিন্তু ইনজুরি ২০০২ বাছাই পর্বে তাঁর প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। রোনালদো এর প্রথম বিশ্বকাপে আসার ঘটনা ছিল আরো ৪ বছর আগে ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সে যেখানে প্রত্যাশার পারদ ছিল আকাশচুম্বী। তিনি ৪ গোল করেছিলেন আর ব্রাজিল প্যারিসে ফাইনাল খেলেছিল। ফ্রান্সের বিপক্ষে সেই ফাইনাল ছিল ফুটবলের সেরা রহস্যগুলোর মধ্যে একটি।

গেরিঃ বিশ্বকাপের ইতিহাসে ফাইনাল খেলা একটি অভূতপূর্ব দিনের একটি। কি হয়েছিল ?

রোনালদোঃ আমরা দুপুরের খাবার শেষ করার আগ পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। আমরা দুপুরের খাবার খেলাম, আনন্দ করছিলাম, আমাদের কক্ষে ফিরে গেলাম। আমি রবার্তো কার্লোসের সাথে ছিলাম, আমি সবসময় রবার্তোর সাথেই কক্ষ শেয়ার করতাম। আমি দাঁত ব্রাশ করে হালকা ঘুম যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি শুয়ে পড়লাম, আমি ভেবেছিলাম আমি ঘুমিয়ে পড়ব। ১০ মিনিট পর আমি জেগে গেলাম, দেখলাম রবার্তো এবং অন্যান্য খেলোয়াড়রা ডাক্তার সহ দরজা দিয়ে প্রবেশ করছে। ডাক্তার বললেন, আমার খিঁচুনি হয়েছে এবং সবাই বলল আমি হয়ত ফাইনাল খেলতে পারব না।

ফাইনালের ঠিক ১ ঘন্টা আগে এটা ঠিক হল যে সে সময়ের সেরা খেলোয়াড়কে ছাড়ায় ফাইনাল হবে।

রোনালদোঃ আমি ভাবছিলাম, এরা কি অদ্ভুত? আমি যদি এখানে থাকি তাহলে আমি কিভাবে ফাইনাল খেলব না এবং আমি সুস্থ এখন। ঠিক আছে আমি বললাম দরকার হলে আমার টেস্ট করাও যেটার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে আমি সুস্থ আছি এবং তারপর আমরা স্টেডিয়াম যাব কারণ আমি খেলবা না এটা হতেই পারে না। আমি টেস্ট করিয়েছিলাম এবং কিছুই পাওয়া যায় নি।

গেরিঃ দল সেইদিন মাঠে ম্যাচের আগে ওয়ার্ম আপ পর্যন্ত করে নি। তুমি হয়ত ভেবেছিলে। কি হচ্ছে এইসব?

রোনালদোঃ হ্যাঁ, আমার মনে হয়ে ব্রাজিলিয়ান কোচ জাগালাও ভেবেছিল রোনালদো বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়, সে খেলতে চাই, যেহেতু ভালো আছে সে, তাঁর খেলা উচিত।

গেরিঃ সেই ফাইনালে হারের জন্য তুমি কি নিজেকে নিজে দোষারোপ কর?

রোনালদোঃ না, না, না আমি কখনো ভাবি নি যে আমাকে দোষারোপ করা যেতে পারে এই জন্য। আমি সত্যিই সাহসী ছিলাম কারণ আমি মনে করি অন্য কেউ এই ম্যাচ খেলার জন্য এত সাহসী হতে পারত না। আমি ফাইনাল খেলা থেকে বঞ্ছিত হতে চাইছিলাম না কারণ নাহয় আমার কিছু হয়ে যেতে পারে এই ভয় ছিল আমার। আমি খারাপ খেলে হারতে পারি কিন্তু কাপুরুষের মত না খেলে হারতে চাই নি।

ব্রাজিল খেলোয়াড়রা তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড়দিনটি হেরে গিয়েছিল ঐদিন কিন্তু সেটা তো মাত্র শুরু ছিল। পরাজয়ের জেরাগুলো ছিল দুঃখজনক এবং অনেক দিন ধরে চলে।

রোনালদোঃ লোকজন অনেক কথাই বলতে থাকে, অনেক ধরণের ষড়যন্ত্রের কথা বলে যে বিশ্বকাপ ফ্রান্সের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

গেরিঃ যখন এই ধরণের কথাগুলো শুনেছ তোমার অনুভূতি ক্যামন ছিল? তুমি কি রাগান্বিত ছিলে? তুমি কি কোন কথা বিশ্বাস করেছ?

রোনালদোঃ না, প্রথমত, এসব শুনে আমার হাসি পেয়েছিল কারণ এসব সম্পূর্ণ চিন্তার অযোগ্য যে আমাদের দায়িত্ববোধের উপর প্রশ্ন করা হবে। আমাদের প্রতি সম্মানের ঘাটতি ছিল মানুষের। আমাকে ব্রাজিলিয়ান কংগ্রেসে যেতে হয়েছিল বিশ্বকাপে কি হয়েছিল সেটা ব্যাখ্যা করতে। সত্যি ঘটনা হল, খেলা আসলেই সুন্দর।

গেরিঃ এটা বিশ্বকাপের ফাইনাল ছিল এবং তুমি খেলতে চেয়েছিলে ।

রোনালদোঃ তাঁরাও জিততে চেয়েছিল, ফ্রান্স পেরেছিল।

রোনালদো ছিল ফুটবলের সবচেয়ে বর সুপারস্টার কিন্তু ঘটনা খারাপ থেকে খারাপের দিকেই গিয়েছিল। তিনি দুইবার হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ল, তাঁর ফিজিওথেরাপিস্ট বলেন ২য়টা ছিল তাঁর দেখা  সবচেয়ে খারাপ ইনজুরি। সে সময় তিনি ৩ সিজন খেলতে পারে নি এবং অনেকে ভেবেছিল তিনি হয়ত আর খেলতে পারবেন না, যদি তিনি কোনভাবে খেলায় ফিরতে পারবে সেটাই হবে অনেক কিছু।

গেরিঃ আমার মনে আছে আমি তোমার সাথে ২০০১ এ কথা বলেছিলাম এবং তোমার হাঁটুতে অনেক বড় ক্ষতচিহ্ন ছিল। ঐ দেখ এখনো সেই চিহ্ন আছে। ২০০২ এ  তোমার বিশ্বকাপে যাওয়া নিয়ে তাঁরা কি চিন্তিত ছিল ?

রোনালদোঃ প্রস্তুতি আসলে অনেক কঠিন ছিল, অনেক বেশি কঠিন। আমি যেকোন মূল্যে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। আমি বিশ্বকাপের কথা ভাবছিলাম না। কারণ আমি জানতাম, খুব বেশি সময় ছিল না কিন্তু আমি যেকোন মূল্যে খেলায় ফিরতে চাইছিলাম।

ব্রাজিল ২০০২ বিশ্বকাপে এমন একটা দল নিয়ে এসেছিল যে তাঁরা আসলে কত ভালো খেলতে পারবে সেটা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী ছিল না, এমনকি তাঁরা মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা তাঁদের বাছাইপর্বের প্রায় শেষের দিকে কোনভাবে নিশ্চিত করেছিল।

৩রা জুন ২০০২(ব্রাজিল বনাম তুর্কি)

তাঁরা তাঁদের মূলপর্বের প্রথম ম্যাচে তুর্কির কাছে ১-০ তে  পিছিয়ে পড়ে এবং তাঁদের ৯ নাম্বার খেলোয়াড়ের কাছ থেকে ভালো কিছু চাইছিল।

গেরিঃ তুমি ভালো শুরু করেছিলে তুর্কির বিপক্ষে।

রোনালদোঃ ঐ সময় আমি পুরোপুরি ফিট কি না সে সম্পর্কে আমার নিজেরই সন্দেহ ছিল।

গেরিঃ হ্যাঁ তোমার হাঁটুর জন্য।

রোনালদোঃ ১ম গোলটি আসলেই অনেক কঠিন ছিল করা। কারণ আমি হেড করি নি, আমি পা  পুরোপুরি বিস্তার করে গোলটি করেছি যেখানে ইনজুরি এর কারণে আমার প্রচুর ব্যাথাও লাগছিল। এটা আসলেই গোল করার জন্য অনেক কঠিন একটি সুযোগ। এটা বিশ্বকাপে পরের ম্যাচগুলোতে আমার আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছিল।

গেরিঃ ২য় গোলটি রিভালদো পেনাল্টি থেকে করেছিল। তুমি কেন পেনাল্টিটা কর নি? তুমি ১৯৯৮ তে পেনাল্টি শট করেছ।

রোনালদোঃ আমার ফ্রি কিক এবং পেনাল্টি নিয়ে অনেক কাজ করেছি। প্রতিদিন ট্রেনিং এর পর আমরা অনেক পেনাল্টি নিয়ে কাজ করেছি। স্কলারি সবসময় ভাগ করে দিত কে কখন কোন শট নিবে আর আমরা কেউ সব গোল করতে চাইতাম না, আমরা শুধু একটি দল হিসেবে জিততে চাইতাম।

দুইটি কোচ চেষ্টা করে অসফল হওয়ার পর বিশেষ করে ১৯৯৮ সালের পর লুই ফেলিপে স্কলারি ব্রাজিল দলকে তাঁদের দুঃসময় থেকে উত্তরণের চেষ্টা করেছেন এবং তিনি বিগ ফিল নামে পরিচিত।

গেরিঃ তুমি স্কলারি এর কন ব্যাপারটি পছন্দ করতে? বড় মনের মানুষ, বড় ব্যাক্তিত্ব , তাই না?

রোনালদোঃ হ্যাঁ, সে শুভচিন্তক একজন মানুষ, অনেক বড় ব্যাক্তিত্বের মানুষ। তিনি মিলিটারি জেনারেলদেরে মত অনেক কঠোর। কিন্তু ট্রেনিং বাদ দিলে খেলোয়াড়দের সাথে তিনি অনেক বন্ধুসুলভ। তিনি খুব পরিস্কারভাবে জানতেন তাঁর কাজ কি। খেলোয়াড়দের হয়ে কথা বলতেন, তিনি সবকিছু থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।

৮জুন ২০০২(ব্রাজিল বনাম চীন)

তুর্কির সাথে অনেক কষ্টের জয়ের পর ব্রাজিল তাঁদের গ্রুপপর্বের পরের ম্যাচগুলোতে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে বিপক্ষ দলকে। প্রথমটা এসেছিল চীনের বিপক্ষে ৪-০ জয়ের মধ্যে দিয়ে। ৪র্থ গোলটি রোনালদো করেন।

গেরিঃ বিশ্বকাপে অনেক গোল হয়েছে। যথাযথ গোল। এই ম্যাচে তোমার করা গোলটি পছন্দ করি। এটা অনেকটা আমার মত করা গোল।

রোনালদোঃ সত্যিকারের স্ট্রাইকারের গোল।

গেরিঃ একেবারেই ঠিক।

রোনালদোঃ তোমার দলের খেলোয়াড়দের যদি তুমি জান আর যদি বুঝ হবে বল কোথায় যাচ্ছে এবং একবার ভাব বলটি কোথায় গিয়ে থামছে। কিন্তু এই গোলটি সত্যিকারের স্ট্রাইকারের মতই গোল বিশেষ করে যখন তুমি জান আসলে কোথায় তোমাকে থাকতে হবে গোল করার জন্য।

চীনের সাথে ৪-০ তে জিতার পর ব্রাজিলের শেষ গ্রুপ ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল কোস্টারিকা।

১৩ জুন ২০০২(কোস্টারিকা বনাম ব্রাজিল)

গেরিঃ এই ম্যাচে ২ টি গোল করেছ তুমি।

রোনালদোঃ কোস্টারিকা এর সাথে?

গেরিঃ হ্যাঁ। স্ট্রাইকারসুলভ গোল।

রোনালদোঃ পত্রিকায় আমি পড়ছিলাম ক্লাসিক স্ট্রাইকারসুলভ গোল যেখানে গোলবারের কাছে ডিফেন্ডাররা থেকেও কি করবে আসলে? ২য় গোলটি আমি খুব দ্রুত নিজেকে পজিশনে রেখে শট নেয় এবং সেটা গোল হয়ে যায়।

গেরিঃ সেই গোলের পর বিশাল হাসি তোমার মুখে।

রোনালদোঃ বেশি চুল ছিল না

ব্রাজিল তাঁদের অসাধারণ ফরোয়ার্ডদের নিয়ে ১ম তিন খেলায় ১১ গোল করেছিল।

রোনালদোঃ রিভালদো, রোনালদিনহো এবং আমি।

গেরিঃ “দ্য থ্রি আর”

রোনালদোঃ তাঁদের সাথে খেলা সত্যিই অনেক আনন্দের ব্যাপার।

গেরিঃ এবং আমি বলব একসাথে খেলতে দেখা ও অনেক আনন্দের ব্যাপার।

রোনালদোঃ হ্যাঁ। এটা সত্যি অসাধারণ একটি দল ছিল। বিগ ফিল দলের খুব ভালোই দেখাশুনা করতেন, সবসময় ভাবতেন ভালো টেকনিক কোনটা প্রয়োগ করা যায়। কারণ আমরা সবসময় ৪-৪-২ তে খেলতাম কিন্তু ৩-৫-২ একেবারে সঠিক ছিল এবং বিগ ফিল সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। দলটি আসলে সব দিক দিয়ে ভালো একটি দল ছিল।

গ্রুপ পর্বের পর গোল্ডেন বুটের দৌড়ে কারা কারা ছিলেন চলুন দেখে আসি।

খেলোয়াড় গোল
মিরোস্লাভ ক্লোসা(জার্মানী)
রোনালদো(ব্রাজিল)
থমাসন(ডেনমার্ক)
রিভালদো(ব্রাজিল)
ভিয়েরি(ইতালী)

গ্রুপ পর্বের খেলা শেষে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ব্রাজিল জাপান থেকে কোরিয়ায় চলে যায় নক আউট পর্বের খেলা খেলতে।

রোনালদোঃ তখন অনেক আত্মবিশ্বাস ছিল আর আমরা বেলজিয়াম এর সাথে খেলতে যাচ্ছিলাম ম্যাচটা। অসাধারণ দল ওদের।

গেরিঃ হ্যাঁ, অসাধারণ দল ছিল।

১৭ জুন ২০০২(ব্রাজিল বনাম বেলজিয়াম)

রিভালদো এই ম্যাচে অসাধারণ  একটি গোল করে।

গেরিঃ এটি আসলে খুব সুন্দর একটি গোল।

রোনালদোঃ হ্যাঁ

গেরিঃ অনেক ভালো লাগে গোলটা

রোনালদোঃ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ। বলের কন্ট্রোল অসাধারণ, সে নিজেকে সামলে খুব দ্রুত শটটা নিয়েছিল এবং গোল ।

গেরিঃ খেলার সাথী হিসেবে ক্যামন ছিলেন রিভালদো? কারণ তিনি অনেক গোল করেছেন এই বিশ্বকাপে।

রোনালদোঃ হ্যাঁ কিন্তু অন্য ফরোয়ার্ড দের মত না।

গেরিঃ তিনি সবসময় শট নিতেন, তাই না?

রোনালদোঃ (হেসে) হ্যাঁ হ্যাঁ। সে সবসময় শট নিত আর আমি সুযোগ খুঁজতাম মিস হলে বলটা গোলবারে ঢুকাতে পারি কি না।

খেলা শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগে রোনালদো আরেকটি গোল করেন।

রোনালদোঃ যদি দেখে মনে হয় গোলটি করা সহজ ছিল আসলে তা মোটেও সহজ ছিল না।

গেরিঃ হ্যাঁ অনেক কঠিন ছিল।

রোনালদোঃ প্রথমত বলটি অনেক জোরে এসেছিল সামনে ছিল গোলকিপার আর আমি বলটা রিসিভ করেছি আমার দুর্বল পা বাঁ পা দিয়ে। এটা আসলেই কঠিন ছিল আমার জন্য।

এই ম্যাচের পর গোল্ডেন বুটের সমীকরণ দাঁড়ায়ঃ

খেলোয়াড় গোল
মিরোস্লাভ ক্লোসা(জার্মানী)
রোনালদো(ব্রাজিল)
থমাসন(ডেনমার্ক)
রিভালদো(ব্রাজিল)
ভিয়েরি(ইতালী)

কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল এবার ইংল্যাণ্ডের বিপক্ষে খেলবে। সে সময়ের দুর্দান্ত ফুটবল তারকা ডেভিড ব্যাকহামের দিকেও সবার চোখ ছিল বিশেষ করে ঐ ম্যাচ ঘিরে।

২১শে জুন ২০০২(ইংল্যান্ড বনাম ব্রাজিল)

রোনালদোঃ ইংল্যান্ড অনেক ভালো একটি দল ছিল ঐ বিশ্বকাপে। ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় ক্যাম্পবেল পুরো খেলায় আমার ঘাড়ে চেপেছিলেন, আমাকে খেলতে দিচ্ছিলেন না, মনে হচ্ছিল আমার ঘাড় ভেংগেই ফেলবেন। আমাদের দলের লুসিও শুরুতে একটা ভুল করে বসে, মাইকেল ওয়েন এতো দ্রুত দৌড়াতেন যে লুসিও এর ভুলকে কাজে লাগিয়ে ইংল্যাণ্ডকে এগিয়ে নেন গোল করে। গোলটি আসলেই অসাধারণ ছিল, মাইকেল ওয়েন কত ভালো ফিনিশার ছিলেন তা এই গোল দেখলেই বুঝা যায়।

গেরিঃ হ্যাঁ নিঃসন্দেহে। তিনি ইনজুরিতে ছিলেন কিন্তু অল্প বয়সে উনি আরো অসাধারণ ছিলেন।

রোনালদোঃ উনি যখন ব্যালন ডি অর জিতেছিলেন, উনি একেবারেই সেটার যোগ্য ছিলেন।

কিছুক্ষণ পর রোনালদিনহো এর একক নৈপূণ্যে অসাধারণ পাস থেকে রিভালদো ব্রাজিলকে সমতায় আনেন। সেই গোল সম্পর্কে রোনালদো বলেন,

রোনালদোঃ অনবদ্য, এখানে রোনালদিনহো যা করেছে তা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। আমি তাঁর বামে ছিলাম আর রিভালদো ডানে ছিলেন। সে রিভালদোকে বলটি দেয় এবং সেই পাস থেকে গোল।

কিছুক্ষণ পর ইংল্যান্ড দলের স্কোলসের করা ফাউলের সুবাধে প্রায় ৩০-৩৫ ইয়ার্ড বাইরে থেকে ব্রাজিল একটি ফ্রি কিক পায় এবং সেই ফ্রি কিক বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা দশের মধ্যে ১টি বলা যায়। এটা ছিল রোনালদিনহো এর করা। এতো মাপা শট এত দূরের ফ্রি কিক থেকে অবিশ্বাস্য। গোলকিপার বোকা হয়ে গিয়েছিল।

রোনালদোঃ এই গোলটি করার আগে থেকেই রোনালদিনহো জানত এটা গোল হবেই , সে এ গোলটা করতেই চেয়েছিল।

গেরিঃ এবং ??? একমাত্র সেই জানত সে কি করেছে, একমাত্র সে ।

রোনালদোঃ সে এই গোলটি করতে মরিয়া ছিল।

গেরিঃ একেবারে গোলবারের টপ কর্ণারে এভাবে গোল হওয়া, আসলেই সে অসাধারণ একজন খেলোয়াড়।

খেলোয়াড়ঃ সে খুব নিখুঁতভাবে এটা করেছে।

গেরিঃ বিশেষ গোলগুলোর মধ্যে অবশ্যই এই গোলটি থাকবে আজীবন। রোনালদিনহো আসলে ক্যামন খেলোয়াড় ছিল? আমরা যে রকম হাসিখুশি দেখতাম বাচ্চাদের মতো এমনই কি ছিল?

রোনালদোঃ সে একজন মজার মানুষ এবং ভালো মানুষ। ও এখন আর বাচ্চা নেই ৪০ বছর হয়েছে।

গেরিঃ অসাধারণ ফুটবলার, দক্ষতা, ফুটবল জ্ঞান। তাই নয় কি?

রোনালদোঃ হ্যাঁ অবশ্যই। সে ২ সিজন বার্সাতে খেলেছে এবং অসাধারণ ছিল সেই সময়কার পারফর্ম্যান্স। কেউ তাঁকে থামাতে পারত না, তাঁর গতি, বলের নিয়ন্ত্রণ, গোল করার সামর্থ্য অসাধারণ খেলোয়াড়।

এই অসাধারণ গোলটি করার কিছুক্ষণ পর কিছু বুঝে উঠতে পারার আগে রোনালদিনহো ফাউলের জন্য লালকার্ড দেখেন এবং বাকিটা সময় ব্রাজিল ১০ জন নিয়ে খেলে অবশেষে ১-২ এ জয়লাভ করে।

রোনালদোঃ এটা খুব বেসিক একটা ভুল ছিল, রোনালদিনহো এর।

গেরিঃ বলতে গেলে মনে হয়েছে একেবারে নবীন খেলোয়াড় যেরকম ভুল করে ঐ রকম।

রোনালদোঃ হ্যাঁ।

গেরিঃ সে তখনো হাসছিল। লাল কার্ড দেখার পর ও ।

রোনালদোঃ এটা খুব সাধারণ একটা ভুল করে বসে সে।

গেরিঃ সে প্রথমে নিজেকে রক্ষা করতে চেয়েছিল।

রোনালদোঃ সে বলকে টোকা দিয়ে পাস দিতে চেয়েছিল কিন্তু এটি তাঁর থেকে দূরে চলে যায়। আসলেই লাল কার্ড দেওয়া ঠিক ছিল।

গেরিঃ তবে ব্রাজিলের অসাধারণ বিজয়

রোনালদোঃ তবে এই ম্যাচ সহজ ছিল না, ইংল্যান্ড অনেক চাপে রেখেছিল আমাদের।

খেলোয়াড় গোল
রোনালদো(ব্রাজিল)
রিভালদো(ব্রাজিল)
মিরোস্লাভ ক্লোসা(জার্মানী)
থমাসন(ডেনমার্ক)
ভিয়েরি(ইতালী)

সেমিফাইনালে ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে তাঁদের গ্রুপ পর্বের সাথী তুর্কি। রোনালদো এর এই ম্যাচে খেলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল কারণ পুরনো ইনজুরি আবার দেখা দিতে লাগল। এই ম্যাচে যখন রোনালদো খেলতে নামে তখন তাঁর এক অদ্ভুত চুলের স্টাইল দেখা যায়।

গেরিঃ আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করব এই অদ্ভুত চ্চুলের স্টাইল কেন? আমরা এটাকে গলফ ডিভোট বলি।

রোনালদোঃ আমি এটা করেছিলাম সেমিফাইনালের আগে।

গেরিঃ হ্যাঁ, এটা তখনই দেখা গিয়েছে প্রথম এবং সবাই দেখেই অবাক হয়েছিল।

রোনালদোঃ সবাই সন্দেহে ছিল আসলে আমি সেমিফাইনালের জন্য ফিট আছি কি না কারণ আমার এবডাক্টর মাসেল এ চোট ছিল। তাই সেমিফাইনালেরে আগের দিন আমি এইভাবে চুল কেটেছিলাম। হোটেলের বারান্দায় আমি আমার দলের সবাইকে দেখাচ্ছিলাম এবং তাঁরা সবাই কৌতুক করছিল আর অনেকেই হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিল। মজার ব্যাপার হল তখন সবাই আমার ইনজুরি বাদ দিয়ে আমার চুলের স্টাইল নিয়ে কথা বলছিল।

গেরিঃ তাঁর মানে তুমি সবার দৃষ্টি অন্যদিকে জেনে বুঝে সরাতে চেয়েছিলে?

রোনালদোঃ সত্যি কথা বলতে হ্যাঁ।

গেরিঃ সত্যি? কে করতে সাহায্য করেছিল এই স্টাইল?

রোনালদোঃ আমি নিজে করেছি।

গেরিঃ তুমি নিজে করেছ?

২৬ শে জুন ২০০২(ব্রাজিল বনাম তুর্কি)

আক্রমণের পর আক্রমণ করেও ব্রাজিল গোল করতে পারছিল না। রোনালদো এর পায়ের আংগুল দিয়ে নেওয়া সরলরেখার মত দেখতে একটা শটে ব্রাজিল ১-০ তে জিতে ব্রাজিল ফাইনালে উঠে।

রোনালদোঃ আমি পায়ের আংগুল দিয়ে শটটা নিয়েছিলাম একেবারে সরলরেখায়। রোমারিও অনেক গোল করেছে এই রকম।

গেরিঃ এই শট কি তাহলে রোমারিও থেকে শেখা?

রোনালদোঃ সে আমার সাথেই খেলত, আমার অনুপ্রেরণ ছিল Futsal । আমি যেখান থেকে শট করেছি গোলরক্ষক আসলে প্রস্তুত ছিল না।

খেলোয়াড় গোল
রোনালদো(ব্রাজিল)
রিভালদো(ব্রাজিল)
মিরোস্লাভ ক্লোসা(জার্মানী)
থমাসন(ডেনমার্ক)
ভিয়েরি(ইতালী)

এবার ফাইনালে ব্রাজিলের মুখোমুখি জার্মানী যাকে বলা হচ্ছিল ইউরোপ বনাম সাউথা আমেরিকা ফুটবলের মহারণ। বলা হচ্ছিল, এই ম্যাচ হবে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকার রোনালদো এবং বিশ্বের সেরা গোলকিপার অলিভার কান এর মধ্যে।

গেরিঃ ব্রাজিল যখন ফাইনালে মাঠে আসছিল সেই ৪ বছর আগে ঘটে যাওয়া ফাইনালের স্মৃতি হয়ত রোনালদো এর মনে পড়ছিল।

রোনালদোঃ ফাইনালের দিন আমি ১৯৯৮ ফাইনালের সেই কষ্টের দিনটাকে অনুভব করেছিলাম, দুপুরের খাওয়া শেষে, একটু ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে উঠে দেখি বিশাল এক সমস্যা।

গেরিঃ তুমি এইটা নিয়মিত করতেই, কিন্তু তুমি কি এই ম্যাচের জন্য এটা পরিবর্তন করার কোন তাগিদ অনুভব করছিলে?

রোনালদোঃ হ্যাঁ, আমি সম্পূর্ণভাবে এটা পরিবর্তন করেছি। আমি দুপুরের খাবার শেষে নিজেকে নিজেই বলতে লাগলাম, আমি ঘুমোতে যাব না, তাই আমি একজনে কক্ষ থেকে আরেকজনের কক্ষে যাচ্ছিলাম যদি কারো সাথে কথা বলা যায়।

গেরিঃ (হেসে) কারণ যদি তুমি না যাও তুমি ভয় পাচ্ছিলে তুমি ঘুমিয়ে পড়বে…

রোনালদোঃ আমি কোনভাবেই ঘুমোতে চাইছিলাম না এবং চোখ বড় বড় করে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম কথা বলার জন্য যদি কারো সাথে কথা বলতে পারি কিন্তু কাউকে পাচ্ছিলাম না, যখন খাবার দাবার শেষ হল আমি গোলকিপার দিদা কে পেলাম, আমি তাঁকে বলছিলাম আমি ভয়ে আছি যে হয়ত আমি ঘুমিয়ে পড়ব, আমি ঘুমোতে চাই না, তুমি কি আমার সাথে থাকতে পারবে কথা বলতে পারবে যেন আমি ঘুমিয়ে না যায়? আমরা দুইজনেই খেলার মাঠে যাওয়ার আগ পর্যন্ত পুরো বিকেল গল্প করে কাটিয়ে দিলাম। তাই যখন আমি মাঠে যাচ্ছিলাম আমার পুরো মনোযোগ ছিল মাঠে।

একের পর এক আক্রমণে পুরোটা সময় জুড়ে ছিল উত্তেজনা যেখানে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠল গোলরক্ষক অলিভার কান এবং জার্মানীর প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের ডিফেন্ডার এবং গোলবার ।

রোনালদোঃ রিভালদো এর শটটি ছিল হুট করে নেওয়া যার জন্য অলিভার কান প্রস্তুত হিলন না, তাঁর হাত থেক বলটা ছুটে যাওয়ার সাথে সাথে আমি গোল করি। আমি চাইছিলাম কান ভুল করুক আর আমি সুযোগটা নেয় এবং তাই হল। আমাদের কোচ স্কলারিকে নিয়ে একটা মজার ঘটনা আছে, আমাকে তিনি বেশি ভিড়ে যেতে নিষেধ করেছিলেন খেলার সময় কারণ তিনি চিন্তিত ছিলেন কারো সাথে জোরে সংঘর্ষ লাগলে আমার ইনজুরি আরো খারাপ হতে পারে এবং একজন স্ট্রাইকার যা করে সে আমাকে করার অনুমতি দিত না।

গেরিঃ তিনি তোমাকে ফাইনালের প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ও রাখে নি, কি করেছ তুমি ফাইনালে?

রোনালদোঃ ফুটবল আসলেই সুন্দর। গোল করার পর আমি তাঁর কাছে যায়, জড়িয়ে ধরি এবং হেসে বলি, তুমি আমাকে প্রস্তুতি নিতে দাও নি দেখ আমাকে দেখ এখানে কি করছি ।

গেরিঃ ( অট্টহাসি দিয়ে ) অসাধারণ।

রোনালদোঃ এটা অবচেতন মনের সাড়া। একজন স্ট্রাইকারকে সবসময় বিশ্বাস করতে হবে একজন গোলরক্ষক ভুল করতে পারে।

খেলা শেষ হওয়ার ঠিক কয়েক মিনিট আগে ক্লেবারসনের পাস থেকে রোনালদো আরো একটি গোল করেন।

রোনালদোঃ আমি চিৎকার করছিলাম রিভালদোকে বলছিলাম বলটা ছেড়ে দাও ছেড়ে দাও আমি আছি।

গেরিঃ এটি অসাধারণ একটি গোল ছিল।

রোনালদোঃ বলের প্রতি নিয়ন্ত্রণের কারণেই এই গোলটি হয়েছে। এটি অসাধারণ ছিল একেবারে বলটি আমার খুব কাছেই ছিল। শুধুমাত্র শট নেওয়ার দরকার ছিল।

গেরিঃ অসাধারণ, খুব সুন্দরভাবে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে গোল। অবশেষে, মনে হচ্ছে ইনজুরির সব কষ্ট, ৪ বছর আগের ফাইনালের সেই দুঃখের সময় সব কেটে গিয়েছিল। তুমিই তো নায়ক ছিলে।

রোনালদোঃ দেখ, এটা সেরা একটি মুহূর্ত ছিল। আমি সবসময় বলি গোলগুলো হল আমার বাচ্চার মতো, কিন্তু ফাইনালে এই দুটো বাচ্চা আমার জন্য জীবনের সবচেয়ে বর পাওয়া। ব্রাজিলের কোচ স্কলারি আমাকে ৫ মিনিট আগে মাঠ থেকে নামিয়ে আনে, আমি কাঁদছিলাম, এ ছিল সুখের কান্না, জয়ের অসাধারণ আনন্দের কান্না। আমার মনে হচ্ছিল আমি বেহেশতে সর্বশক্তিমানের হাত ধরছি ।

২-০ গোলে ব্রাজিল জার্মানীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। সারা মাঠে, পুরো ব্রাজিল জুড়ে আনন্দের বন্যায় ভাসতে লাগল, ব্রাজিলের সাপোর্টাররা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছিল।

গেরিঃ তুমি ফাইনালে ২ গোল করলে, বিশ্বকাপ জিতলে, সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোলদেন বুট জিতলে, একটু চেষ্টা কর বলতে, তোমার ক্যামন লাগছিল ঐ সময়?

রোনালদোঃ অসাধারণ। অনেক ব্যক্তিগত বিষয় ছিল যা আমাকে আনন্দ আর সন্তুষ্টি দিয়েছিল। আমার ছেলেমেয়েদের অনেক খুশি এনে দিয়েছিল। আমার এই রকম ভালো আগে কখনো লাগে নি। ইনজুরির সাথে যুদ্ধ করে এসে ২ বছর পর বিশ্বকাপ জেতা এটা সত্যিই অনেক বড় পাওয়া আমার জন্য।

গেরিঃ যখন তুমি এই খেলাগুলি আবার দেখো, ক্যামন লাগে তোমার?

রোনালদোঃ যখনই আমি দেখি মনে হয় যেন আমি একটা দায়িত্ব পালন করেছি। অনেক বাঁধা বিপত্তিকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে আমরা সবাই এক লক্ষ্যে অনেকদিন কাজ করেছি এবং সফলতাও পেয়েছি। অসাধারণ লাগে যখন দেখি।

গেরিঃ ফাইনালে গোল করার অনুভূতি ক্যামন?

রোনালদোঃ যদিও বা এই গোল দুটি আমার ক্যারিয়ারের সুন্দরতম গোলগুলোর মত নয় তবে এই দুটি গোল আমার জন্য সবচেয়ে সুন্দর। যখন ব্রাজিলে ফিরে গেলাম এতো ভালো লাগছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়ে, তাঁরা তাঁদের দৈনন্দিন সব সমস্যার কথা ভুলে, নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একই সুরে আমাদেরে অভিবাদন জানিয়েছিল। ফুটবলই হল মানুষের জীবনে সবচেয়ে শক্তিশালী।

এই আসরের শেষে রোনালদো ৮ গোল নিয়ে গোল্ডেন বুট বিজেতা হয়।

খেলোয়াড় গোল
রোনালদো(ব্রাজিল)
রিভালদো(ব্রাজিল)
মিরোস্লাভ ক্লোসা(জার্মানী)
থমাসন(ডেনমার্ক)
ভিয়েরি(ইতালী)
Share

3 thoughts on “রোনালদো এর চোখে ফিরে দেখা ১৯৯৮ ও ২০০২ ফিফা বিশ্বকাপ

  1. This is the right blog for anyone who wants to find out about this topic. You realize so much its almost hard to argue with you (not that I actually would want…HaHa). You definitely put a new spin on a topic thats been written about for years. Great stuff, just great!

  2. Along with the whole thing which appears to be building within this particular subject material, your viewpoints are generally somewhat stimulating. Having said that, I am sorry, but I can not subscribe to your whole theory, all be it radical none the less. It would seem to everyone that your comments are actually not totally justified and in actuality you are your self not really completely certain of the point. In any case I did appreciate looking at it.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Proudly powered by WordPress | Theme: Lean Blog by Crimson Themes.