একটা সময় ছিল এ দেশের মানুষ ফুটবলকেই প্রাধান্য দিত সবচেয়ে বেশি। কিন্তু কালের পরিক্রমায় ক্রিকেট যে কখন এ দেশের প্রতিটা ঘরে পৌঁছে গিয়েছে তা এখনো অবিশ্বাস্য। আজ শুনব বাংলাদেশের শুরুর দিকের কিছু বাস্তব ঘটনা।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদাচারণা শুরু হয় ১৯৭৯ সালে আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে। ঐ বছর বাংলাদেশ দল গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বে ২ টি ম্যাচে জয়লাভ করে। এখনের মতো ঐ সময় খুব ঘন ঘন ক্রিকেট ম্যাচ হতো না। প্রায় সাত বছর পর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে সর্বপ্রথম ওডিআই ম্যাচটি খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জিতে এবং এর মাধ্যমে প্রথম বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়(ইংল্যান্ডে) ১৯৯৯ সালে এবং প্রথমবার বিশ্বকাপে গিয়ে পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করে। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের পর থেকেই এ দেশে ক্রিকেটের প্রতি মানুষের আগ্রহ ভালোবাসা বাড়তে থাকে। সমসাময়িক সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ দুটো দলে ভাগ হয়ে সমর্থন করত- একটি হল শচীন-সৌরভের ভারতীয় ক্রিকেট দল এবং অন্য দলটি হল ওয়াসিম-ইনজামামদের পাকিস্তান ক্রিকেট দল। কিন্তু এই দৃশ্যপট ধীরে ধীরে পাল্টাতে থাকে। ১৯৯৯ সালের পর থেকে এ দেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি ভালো লাগা একাগ্রতা এক অন্য মাত্রা পায়। শচীন-সৌরভ-ওয়াসিম-ইনজামামদের প্রতি অনুরাগী ভক্তরা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের গুরুত্ব দিতে শুরু করে। তবে এই যাত্রাপথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পদক্ষেপগুলো ছিল দর্শকবান্ধব। অনেক বাঁধা বিপত্তি অভাব স্বত্বেও শুরুর দিকের খেলোয়াড়রা দেশের জন্য খেলে গিয়েছেন এবং যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা প্রশংসার যোগ্য।
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম সফলভাবে এশিয়া কাপের আয়োজন করে। বাংলাদেশ ওডিআই তে সর্বপ্রথম জয়টি পাই ভারতের মাটিতে কেনিয়ার বিপক্ষে। সেইদিন মোহাম্মদ রফিক এবং আতাহার আলী খান ১৩৭ রানের জুটি করেন এবং ম্যাচ জেতাতে ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৭ তে আইসিসি ট্রফি জয়ের পর ১৯৯৯ এর বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে অনবদ্য অলরাউন্ড পারফর্মেন্সের মাধ্যমে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন খালেদ মাহমুদ সুজন। বাংলাদেশ ঐ বছর পরবর্তী রাউন্ডে যেতে না পারলেও এই জয় বাংলাদেশকে টেস্ট স্ট্যাটাস পেতে সহায়তা করেছিল।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা নিজের দেশকে কিভাবে ধীরে ধীরে বিশ্বদরবারে পরিচয় করালো তা থাকবে সামনের পর্বগুলোতে।